সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের প্রধান দায়ভার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাঁধে বর্তেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যার প্ররোচনা ও নির্দেশনা—এই পাঁচটি স্পষ্ট অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত সংস্থা।
সোমবার সকালে তদন্তকারী দল তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে জমা দেয়। এরপর ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিলের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পেছনে উচ্চ পর্যায়ের দায়বদ্ধতা রয়েছে শেখ হাসিনার। তিনি কেবল নীরব দর্শক ছিলেন না, বরং সরাসরি উসকানি ও নির্দেশ দিয়েছেন।”
প্রাথমিকভাবে শুধু শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করে তদন্ত শুরু হলেও, পরে আরও দুই শীর্ষ সাবেক কর্মকর্তাকে তদন্তের আওতায় আনা হয়—তারা হলেন: সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
তদন্তে বলা হয়েছে, এই দুইজন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে ওই সময়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের ‘রাজাকারের সন্তান’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন শেখ হাসিনা। এ ধরনের ভাষাগত অপমান ও বৈষম্যমূলক আচরণ গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। তবে প্রসিকিউশনের অনুরোধে দুইবার সময় বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আদালতে দাখিল করা হয়েছে।