Home বাংলাদেশ কূটনীতি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের ইফতার

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের ইফতার

Posted by on in বাংলাদেশ 0
1st Image

বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক অনন্য দৃশ্যের সাক্ষী হলো বিশ্ব। লাখো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ইফতার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি ছিল শুধুমাত্র এক ইফতার অনুষ্ঠান নয়, বরং মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

শুক্রবার দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বিভিন্ন আশ্রয়শিবির ঘুরে দেখেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে কথা বলেন। তিনি বিশেষভাবে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। ইউনিসেফ পরিচালিত ‘ফেন্সি লার্নিং সেন্টার’-এ পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময়, শিশুরা তাদের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জাতিসংঘ মহাসচিবের উপস্থিতি কাজে লাগিয়ে তাদের দাবি তুলে ধরেন। তারা রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতন ও গণহত্যার বিচার চেয়ে জাতিসংঘের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পাশাপাশি তারা মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চান। তাদের এই আবেদন জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

শুক্রবার দুপুর ১টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে কক্সবাজার পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিমানবন্দরে পৌঁছে তারা সরাসরি উখিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।  দুপুর ২টার দিকে তারা উখিয়ায় পৌঁছে বিভিন্ন সংস্থা পরিচালিত শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব সেখানে রোহিঙ্গা সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চান এবং তাদের কারুশিল্প ও পাটজাত পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

পরিদর্শনের শেষ অংশে জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন। উখিয়ার ২০ নম্বর ক্যাম্পে আয়োজিত এই ইফতার মাহফিলে রোহিঙ্গারা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশের সুযোগ পান। জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেন। ইফতার শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ কমানোর জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।”

সন্ধ্যা ৭টায় ক্যাম্প পরিদর্শন শেষ করে তারা কক্সবাজার ত্যাগ করেন এবং রাতেই ঢাকায় ফিরে আসেন।