এক রাতেই উধাও খামারের সব গরু
গোপালগঞ্জ সদরের শাহপুর ইউনিয়নের ডুমরাসুর গ্রাম ৬২১ বিঘা জমির ওপর স্ত্রী-সন্তানদের নামে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) গড়ে তুলেছিলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে গড়া এই বিশাল পার্কের প্রকল্পের আওতায় ছিলো বিশাল গরুর খামারও। জানা যায়, প্রায় ১৫ কাঠা জমির ওপর স্থাপিত খামারে ২০টির বেশি গরু ও দুটি দুম্বা ছিল।
কিন্তু সাম্প্রতি বেনজীরের সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চলমান অনুসন্ধানের মধ্যেই উধাও হয়ে যায় সেই খামারের গবাদিপশুগুলো। একরাতেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে সব। সরজমিন দেখা যায় বিশালকার এই খামারে এখন সুনসান নীরবতা। খামারে কিছু খড় এবং সম্পত্তিটি সোনালী ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ লিখিত একটি সাইনবোর্ড সাঁটানো ছাড়া আর কিছু নেই।
জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধান শুরুর আগে খামারে প্রায় ৪০টির মতো গরু ছিল। ২৭শে মে ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে যখন সবাই আতঙ্কিত সে সময়ই রাতে ঝড়ের মধ্যেই নয়টার দিকে আঁধারে সরানো হয় সব গরু। ১১ মাসের মতো খামারের দায়িত্বে থাকা বারেক মিয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর আর ফেরেনি।
খামারের কয়েকশ গজ দূরে অবস্থিত এক বাড়ির বাসিন্দা রণদাশ জানায়, ”গরু আগে বেশি ছিল। ৪০টার মতো। সব গাই গরু। ঘূর্ণিঝড়ের সময় রাতের বেলা দুই ট্রাক ভরে নিয়ে গেছে।” সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পার্কটির বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখার সময় মাহবুবুল জানায়, আপাতত পার্কটি বন্ধ থাকলেও খুব তাড়াতাড়ি আদালতের অনুমতি নিয়ে চালু করা হবে।
বেনজীর আহমেদ শুধু দেশের ভেতরেই নয়, বাইরেও অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে জানায় দুদক। দুবাইয়ের পাম জুমেরা ও মেরিনা এলাকায় কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টের খোঁজ পেয়েছে দুদক। তাছাড়া ঢাকা, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কক্সাজার, সেন্টমার্টিন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় অবৈধ সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্য গড়েছেন বেনজীর আহমেদ।