দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর টানা চারদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। এ অবস্থায়, যখন বিশ্ব সম্প্রদায় শান্তির আহ্বান জানাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, ভারত কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে তার কঠোর জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত পাকিস্তান।
সাম্প্রতিক ঘটনার পটভূমি
বিষয় | তথ্য |
---|---|
গোলাগুলির স্থান | নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC), কাশ্মীর অঞ্চল |
সংঘর্ষের সময়কাল | টানা ৪ দিন |
অভিযুক্ত পক্ষ | ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই একে অপরকে দায়ী করছে |
প্রধান ইস্যু | পেহেলগাম হামলা ও তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া |
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে জানান, দেশের সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার আশঙ্কায়। যদিও কী কারণে তারা এই হামলার আশঙ্কা করছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
২২ এপ্রিল, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি মর্মান্তিক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৬ জন পর্যটক প্রাণ হারান, যার মধ্যে দুইজন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। এ হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে।
ভারত দাবি করেছে, হামলাকারীদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক। যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো শক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি দিল্লি। অন্যদিকে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
খাজা আসিফ বলেন, "আমরা আমাদের অস্ত্রশস্ত্র এবং বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত অবস্থায় রেখেছি। কেবলমাত্র আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করা হবে।" পরবর্তীতে সামা টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী জানান, "যুদ্ধ যে কোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার এখনই সময়।"
খাজা আসিফ পরে জিও নিউজকে ব্যাখ্যা দেন যে, তাঁর মন্তব্য যেন এমনভাবে ব্যাখ্যা না করা হয় যেন যুদ্ধ দুই-তিন দিনের মধ্যেই অবশ্যম্ভাবী। তিনি কেবল বলেছেন, "আগামী কয়েকটি দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ; এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি উন্নতি বা অবনতি উভয়ই ঘটতে পারে।"
এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। চীন, সৌদি আরব, ইরান ও যুক্তরাজ্যের নেতারা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
তারা সবাই দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা কমানোর জন্য দু’দেশকেই আহ্বান জানিয়েছেন।
চীন, সৌদি আরব, বেইজিং,ইরান, যুক্তরাজ্য, ওয়াশিংটন, আঙ্কারা ও দোহা থেকেও আহ্বান এসেছে – ভারত ও পাকিস্তান যেন সংযম প্রদর্শন করে এবং উত্তেজনা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, ইসলামাবাদ তার মিত্র দেশগুলির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে, বিশেষ করে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে। যদিও নির্দিষ্ট কোন দেশের নাম প্রকাশ করেননি, তবে উল্লেখ করেন যে, কিছু বন্ধু রাষ্ট্র ইতোমধ্যেই উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।