বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার বনানী কবরস্থানে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর ১০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি গণমাধ্যমের সামনে শেখ হাসিনার কথার পুনরাবৃত্তি এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “১/১১-এর পুনরাবৃত্তির ভয় দেখানো হচ্ছে। আমরা বুক চিতিয়ে আন্দোলন করেছি। কিন্তু এত গড়িমসি কেন? কেন নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে না? কেন শেখ হাসিনার কথার মতো ‘আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র’ এর পুনরাবৃত্তি শোনা যাচ্ছে? আমরা সংস্কারের অজুহাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব দেখতে চাই না। মানুষ প্রত্যাশা করে অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে।”
রিজভী বলেন, “সরকারি উপদেষ্টারা কেন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলছেন? এতে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে। জনগণের প্রত্যাশা, এই সরকার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। তবে ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ শুনলে মনে হয়, শেখ হাসিনার ‘আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র’ কথার প্রতিধ্বনি।”
রিজভী আরও বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই দেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে। কিন্তু আজ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে এত দ্বিধা কেন? এত বিলম্ব কেন? গণতন্ত্র মানে আলোচনা, প্রশ্ন আর স্বচ্ছতা। অথচ জনগণের এই ন্যায্য জিজ্ঞাসাকে অন্যায় মনে করা হচ্ছে।”
প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু প্রসঙ্গে রিজভী অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রেই আরাফাত রহমান কোকোকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যেন তাকে জান্নাত নসিব করেন।”
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব এবং আরও অনেক নেতাকর্মী। রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিএনপির এই কঠোর অবস্থান জনমনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।