যুক্তরাজ্য অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। লেবার সরকারের নেতৃত্বে দেশজুড়ে অভিবাসন বিরোধী অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে ভারতীয়সহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।
ব্রিটেনের হোম অফিসের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যজুড়ে ৮২৮টি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৪৮% বেশি। এসব অভিযানে ৬০৯ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭৩% বেশি। বিশেষত রেস্তোরাঁ, নেইল বার, গাড়ি পরিষ্কারক ও টেকঅ্যাওয়ে দোকানগুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে, কারণ এই খাতগুলিতে নথিপত্রবিহীন অভিবাসীদের সংখ্যা বেশি।
অঞ্চল | অভিযানের ফোকাস | গ্রেপ্তারের সংখ্যা |
---|---|---|
লন্ডন | ভারতীয় রেস্তোরাঁ ও গার্মেন্টস | ২৫০+ |
উত্তর ইংল্যান্ড | খাবার ও তামাক শিল্প | ৩০০+ |
হাম্বারসাইড | রেস্তোরাঁ ও টেকঅ্যাওয়ে | ৭ জন গ্রেপ্তার, ৪ জন আটক |
ব্রিটিশ সরকার অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মূলত দুইটি কারণে:
- অবৈধ অভিবাসীদের দ্বারা অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব
- অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দেশে ফেরত পাঠানো
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, "অবৈধ অভিবাসীদের অবশ্যই আমাদের অভিবাসন আইন মানতে হবে। তারা নিয়ম লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তিনি আরও বলেন, "অনেক নিয়োগকর্তা অবৈধ অভিবাসীদের শোষণ করছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। আমরা এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে চাই।"
নতুন অভিবাসন নীতির প্রধান দিক
নীতি | বর্ণনা |
---|---|
শো, নটেল টেল’ কৌশল | কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অভিবাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চায় সরকার। |
নির্বাসন ফ্লাইট বৃদ্ধি | দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চারটি নির্বাসন ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। |
অপরাধীদের প্রাধান্য | মাদক, চুরি, ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের প্রথমে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। |
উচ্চ জরিমানা | অবৈধ অভিবাসী নিয়োগকারী নিয়োগকর্তাদের ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। |
সরকারের মতে, এই কঠোর নীতি ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসন কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, শ্রমিক সংকট তৈরি হতে পারে, কারণ অনেক খাতেই অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অবৈধ অভিবাসীদের জীবন আরও কঠিন হয়ে উঠবে, কারণ তারা কর্মসংস্থান ও আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন।
সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর বিশ্লেষণ
আইন পরিবর্তন | প্রভাব |
---|---|
সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার | নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। |
মোবাইল ফোন জব্দ করার ক্ষমতা | অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে নতুন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। |
ভিসা নীতি কঠোরকরণ | উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিকদের জন্য সুযোগ থাকলেও নিম্ন দক্ষতার শ্রমিকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। |
ব্রিটেনের বর্তমান অভিবাসন নীতি অবৈধ অভিবাসন হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, তবে মানবাধিকার ও অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈধ অভিবাসনের জন্য সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে শ্রম বাজারে ভারসাম্য বজায় থাকে। অভিবাসন আইন কঠোর করার পাশাপাশি মানবিক বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা জরুরি।