বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে ফিতরা বা সাদাকাতুল ফিতর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কর্তব্য, যা রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের পূর্বে আদায় করা হয়। এটি মুসলমানদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক দান, যা তাদের রোজার পবিত্রতা রক্ষা এবং সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়।
২০২৫ সালে ফিতরার নির্ধারিত হার:
জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটি ১৪৪৬ হিজরি সনের জন্য ফিতরার হার নির্ধারণ করেছে। এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২,৮০৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে গত বছর (২০২৪) সর্বনিম্ন ফিতরা ছিল ১১৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২,৯৭০ টাকা। সেই হিসাবে এ বছর সর্বনিম্ন ৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৬৫ টাকা কমেছে।
ফিতরা নির্ধারণের পদ্ধতি:
ইসলামী শরিয়াহ মতে, গম, আটা, যব, খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের নির্দিষ্ট পরিমাণ বা এর বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে প্রদান করা যায়। গম বা আটা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ১১০ টাকা দিতে হবে। যবের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ৫৩০ টাকা, খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২,৩১০ টাকা, কিশমিশের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ১,৯৮০ টাকা এবং পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২,৮০৫ টাকা ফিতরা দিতে হবে
ফিতরা আদায়ের সময় ও পদ্ধতি:
ফিতরা আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বে। তবে, রমজান মাসের শুরু থেকেই ফিতরা প্রদান করা যায়। ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা হয়, যা ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফিতরার তাৎপর্য:
ফিতরা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা তাদের রোজার পবিত্রতা রক্ষা এবং সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়। এটি মুসলিম সমাজে সহমর্মিতা, দয়া এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের রোজার পূর্ণতা অর্জন করে এবং সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে। এটি ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মুসলিম সমাজে সহমর্মিতা ও দয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে।