রমজান মাস এলেই সাধারণত অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে পরিবর্তন দেখা যায়। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্বাভাবিক বা নিম্নমুখী থাকলেও চালের বাজারে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া মৌসুমী সবজিগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি থাকলেও অন্যান্য সবজি এখনো নাগালের মধ্যেই রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরু চালের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে রয়েছে। মাঝারি মানের চাল ৭০ থেকে ৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর মোটা চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, গত ছয় মাসে তিন দফা চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।
চালের খুচরা বিক্রেতাদের মতে, শেষ এক সপ্তাহে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। বিশেষ করে রশিদ, উৎসব ডায়মন্ড, মোজাম্মেল ইত্যাদি ব্র্যান্ডের চালের দাম কেজিতে ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে।
বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও কিছু মৌসুমী সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। রমজানের শুরুতে বেগুনের দাম ১০০ টাকা ছাড়ালেও বর্তমানে এটি ৮০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে।
সবজি বাজারের বর্তমান মূল্য তালিকা:
- টমেটো: প্রতি কেজি ২০ টাকা
- ক্ষিরা: প্রতি কেজি ৫০ টাকা
- শিম: প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা
- শসা: প্রতি কেজি ৬০ টাকা
- করলা: প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা
- পটল: প্রতি কেজি ১০০ টাকা
- জালি কুমড়া: প্রতি পিস ৫০ টাকা
- ফুলকপি: প্রতি পিস ৪০ টাকা
- বাঁধাকপি: প্রতি পিস ৩০ টাকা
- কাঁচামরিচ: প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা
- লাউ: প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা
- ঢ্যাঁড়শ: প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা
- কাঁচা কলা: প্রতি হালি ৪০ টাকা
গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৬ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে গত বছর এ সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দামও কমে বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে রয়েছে।
রমজানের শুরুতে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিলেও এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেল সব দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে, তবে কিছু কিছু স্থানে বোতলজাত তেলের সরবরাহ এখনও কম দেখা যাচ্ছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতাদের মতে, অন্যান্য রমজানের তুলনায় এবছর সবজির বাজার তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক। কিছু মৌসুমী সবজির দাম বেশি হলেও অধিকাংশ পণ্যই এখনো ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।
সবজি বিক্রেতা আলীর মতে, “এবারের রমজানে সবজির দাম তুলনামূলক কম রয়েছে। তবে ঢ্যাঁড়শ, করলা, পটলের দাম বেশি কারণ এগুলো এখন মৌসুমী সবজি নয়, তাই বাজারে সরবরাহ কম।”