ধূমপানে আসক্তি শুধু নিজের নয়, আশপাশের মানুষের জন্যও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করা সহজ নয়, তবে ইচ্ছাশক্তি ও মানসিক প্রস্তুতি থাকলে তা সম্ভব। এই বিষয়টি প্রমাণ করেছেন তুরস্কের ইব্রাহিম ইউসেল, যিনি ধূমপান ত্যাগের জন্য একটি অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন।
২০১৩ সালে ইব্রাহিম ইউসেল ধূমপান ত্যাগের জন্য তাঁর মাথায় ধাতব খাঁচা পরা শুরু করেন। এটি দেখতে অনেকটা হেলমেটের মতো। তিনি প্রতিদিনের জীবনে এই খাঁচা ব্যবহার করতেন, যাতে তিনি নিজের মুখে সিগারেট তুলতে না পারেন। খাঁচার চাবি ছিল তাঁর স্ত্রীর কাছে, যিনি কেবল খাবারের সময় সেটি খুলে দিতেন। ইব্রাহিম ২৬ বছর ধরে প্রতিদিন দুই প্যাকেট সিগারেট খেতেন। তিনি ধূমপান ত্যাগের জন্য পরিবারকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল আসেনি। শেষমেশ তিনি এমন একটি পদ্ধতি অবলম্বন করেন যা তাঁকে বিশ্বজুড়ে পরিচিত করে তোলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ধূমপানের কারণে প্রতিবছর ৮০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ধূমপানের কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। ধূমপান না করেও যাঁরা পরোক্ষভাবে তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসেন, তাঁদেরও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। শিশুরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ বিশ্বের প্রায় অর্ধেক শিশু তামাকের দূষিত ধোঁয়ার মধ্যে শ্বাস নেয়। এভাবে প্রতিবছর প্রায় ৬৫ হাজার শিশু মারা যায়।
ইব্রাহিম ইউসেলের এই অভিনব পদ্ধতি থেকে বোঝা যায়, ধূমপান ত্যাগ করতে ইচ্ছাশক্তি ও সৃজনশীলতার প্রয়োজন। যদিও তাঁর পদ্ধতির সফলতার অকাট্য প্রমাণ নেই, এটি অনেক মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছে। ধূমপান ত্যাগের জন্য প্রথাগত পদ্ধতির পাশাপাশি নতুন এবং সৃজনশীল কৌশল ব্যবহার করাও কার্যকর হতে পারে। তবে, সবার আগে প্রয়োজন একটি দৃঢ় মানসিক প্রস্তুতি। ধূমপান ত্যাগ শুধু নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যই নয়, বরং আশপাশের মানুষদেরও সুরক্ষিত রাখার জন্য জরুরি। ইব্রাহিমের মতো ছোট পদক্ষেপ হয়তো বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।