বলিউড তারকা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় মুম্বাই পুলিশ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে অভিযুক্তের বাবা রুহুল আমিন ফকির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা ব্যক্তির সাথে তাঁর ছেলের চেহারা মেলাতে পারছেন না।
এক সাক্ষাৎকারে শরিফুলের বাবা বলেন, “সিসিটিভিতে যে ছেলেটিকে দেখা গেছে, সে আমার ছেলে নয়। আমার ছেলে উল্টে চুল আঁচড়াত, কপাল পর্যন্ত চুল রাখত না। তবে পুলিশ যে ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করেছে, সে-ই আমার ছেলে।”
রুহুল আমিন আরও জানান, শরিফুল গত বছর ঝালকাঠির বাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে যান। প্রতি মাসের ১২ তারিখের মধ্যে তিনি পরিবারকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পাঠাতেন। শেষবার তিনি গত শুক্রবার রাতে বাবাকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছিলেন।ভারতীয় গণমাধ্যমে শরিফুলকে বাংলাদেশি কুস্তিগির হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে রুহুল আমিন এ দাবি নাকচ করে বলেন, “আমাদের এলাকায় কুস্তির তেমন প্রচলন নেই। শরিফুল কুস্তিগির নয়, বরং সে ফুটবল খেলত। শরিফুল ঝালকাঠিতে যাত্রী আনা-নেওয়ার কাজ করত।”
রুহুল আমিন বলেন, “আমি কখনো আমার ছেলের নামে কোনো অভিযোগ শুনিনি। সাইফ আলী খানের মতো একজন মানুষের মামলায় আমার ছেলেকে জড়ানো হচ্ছে। আমি চাই, আমার ছেলে সঠিক বিচার পাক। আমাদের কেউ ভারতে নেই। আমরা খুব অসহায়। ভারতীয় হাইকমিশন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার কথা ভাবছি।” অভিযুক্ত শরিফুলের আইনজীবী সন্দীপ শেখানে বলেন, “পুলিশের দাবি যে তিনি বাংলাদেশি, তার কোনো প্রমাণ নেই। বরং অভিযুক্ত মুম্বাইতে পরিবারের সঙ্গে সাত বছর ধরে বসবাস করছেন।” তিনি আরও বলেন, “পুলিশ নাগরিকত্ব বদলে মামলার দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে। শরিফুলের কাছ থেকে পুলিশ কোনো প্রমাণও পায়নি।”
শরিফুলের বাবা বলেন, “আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। আমার তিন ছেলের মধ্যে শরিফুল দ্বিতীয়। সে এখনো বিয়ে করেনি। আমি শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, যেন আমার ছেলে ন্যায্য বিচার পায়।” এই মামলাটি শুধু একটি অপরাধ তদন্ত নয়, বরং একটি পরিবারের অসহায় অবস্থার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে। অভিযুক্তের নাগরিকত্ব এবং সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণ নিয়ে বিতর্ক চললেও, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য সব পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন।