বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ-এর কোম্পানিগুলো এখন থেকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারিতে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে, বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যবসা পরিচালনায় আর কোনো রিসিভার নিয়োগ থাকবে না।
গত ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪, হাইকোর্ট বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছিল। তবে ২০২৫ সালের ১২ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিসিভার নিয়োগ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন।
রায়ের মূল বিষয়বস্তু:
- বেক্সিমকো গ্রুপ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে এবং পরিচালনার জন্য কোনো রিসিভার নিয়োগ করা হবে না।
- বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের ওপর কড়া নজরদারি বজায় রাখবে।
- ইতোমধ্যে নিয়োগকৃত রিসিভারের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো বৈধ বলে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং ব্যারিস্টার মো. মনিরুজ্জামান। অন্যদিকে, বেক্সিমকো গ্রুপের পক্ষে ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বেক্সিমকো গ্রুপের অধীনে ১৮৯টি কোম্পানি রয়েছে, যার মধ্যে ১৬৯টি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত। আদালতের এই রায়ের ফলে, বেক্সিমকোর সকল কোম্পানি আগের মতোই তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।
এর আগে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে হাইকোর্ট রুল জারি করে ৬ মাসের জন্য রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে বেক্সিমকো ফার্মার ক্ষেত্রে রিসিভার নিয়োগের আদেশ বাতিল হয়েছিল। অবশেষে, ১২ মার্চের রায়ে বাকি সব কোম্পানির ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।
হাজার হাজার কর্মীর স্বার্থ রক্ষার জন্য আদালত মনে করেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালনা কোম্পানিগুলোর নিজেদের হাতেই থাকা উচিত। এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।