Home আন্তর্জাতিক ইউরোপ পুতিন মিথ্যা বলছেন: জেলেনস্কি

পুতিন মিথ্যা বলছেন: জেলেনস্কি

Posted by on in আন্তর্জাতিক 0
1st Image

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতোমধ্যেই তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলছে, এবং এই সংঘাত প্রতিদিন আরও জটিল হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন যে, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং রুশ সেনারা ওই অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে। তবে এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, পুতিন যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিথ্যাচার করছেন এবং প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে।

কুরস্ক অঞ্চলে যুদ্ধের বাস্তবতা

গত গ্রীষ্মে ইউক্রেন আকস্মিকভাবে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের কিছু এলাকা দখল করে। যদিও রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে সেসব এলাকা পুনর্দখল করার চেষ্টা করছে, তবে বাস্তবে ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। পুতিন দাবি করেছেন যে, ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তবে এমন কোনো ঘটনার বাস্তব প্রমাণ মেলেনি। 

যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে পুতিনের ভূমিকা

যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা কিয়েভ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নিয়েছে। তবে রাশিয়া এখন পর্যন্ত এই প্রস্তাবে কোনো সায় দেয়নি। জেলেনস্কির মতে, রাশিয়া যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দেরি করছে, কারণ তারা যুদ্ধের আগে নিজেদের সামরিক শক্তি আরও বৃদ্ধি করতে চায়। এই বিলম্ব কৌশলগত, যা রাশিয়াকে আরও সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে।

পুতিন বনাম ট্রাম্প: যুদ্ধবিরতির রাজনৈতিক দিক

এএফপির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি না জানিয়ে পুতিন মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাত দীর্ঘায়িত করতে চাইছে, যাতে তাদের ভূখণ্ডগত দাবিগুলোর স্বীকৃতি আদায় করা যায়।

ইউক্রেনের দৃঢ় অবস্থান

জেলেনস্কি পুনরায় জানিয়েছেন যে, ইউক্রেন কখনোই রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দেবে না। তার মতে, যে কোনো শান্তি আলোচনার ভিত্তি হতে হবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা। ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি কিয়েভের কাছে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির একটি সম্ভাবনা হলেও, এর বিনিময়ে তারা কোনো ভূখণ্ড হারাতে রাজি নয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাস্তবায়ন হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। রাশিয়ার পক্ষ থেকে সম্মতি আসলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে, তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল। ইউক্রেন এবং পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার কার্যকলাপকে পর্যবেক্ষণ করছে, এবং কূটনৈতিকভাবে রাশিয়াকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার কৌশলগত পরিকল্পনা এখনো অস্পষ্ট, তবে স্পষ্টতই তারা সংঘাত দীর্ঘায়িত করতে আগ্রহী।