পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই ঘটনার পর, পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এর প্রভাব ইতিমধ্যে বিমান চলাচলে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে ভারতের আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক উড়ানে।
পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পর, ভারতের যাত্রীবাহী বিমানগুলোর রুট পরিবর্তন করতে হচ্ছে। যার ফলে, ফ্লাইটগুলোর সময় এবং খরচ দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন, সান ফ্রান্সিসকো থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইটগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পারায়, গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় লাগছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার-২৪ অনুযায়ী, পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার না করতে পারায় উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহর থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইটগুলোতে অতিরিক্ত জ্বালানি প্রয়োজন হচ্ছে। এসব ফ্লাইটে এখন যাত্রাবিরতি দিতে হচ্ছে, যেটি পূর্বে ছিল না। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানগুলো এখন ভিয়েনা এবং কোপেনহেগেন শহরে থামছে জ্বালানি নিতে। বিশেষ করে ভিয়েনা শহরে বেশি সময় থামছে এসব ফ্লাইট।
দিল্লি থেকে শিকাগোগামী এআই ১২৭ ফ্লাইট আগের চেয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা ৩০ মিনিট বেশি সময় নিচ্ছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পারায়, এই ফ্লাইটকে প্রায় ১৫,০০০ কিলোমিটার পারি দিতে হচ্ছে। এর ফলে ফ্লাইটের সময় বেড়ে ১৯ ঘণ্টা হয়ে গেছে, যা আগের তুলনায় ৪ ঘণ্টা বেশি।
সান ফ্রান্সিসকো থেকে দিল্লিগামী এআই ১৭৪ ফ্লাইটটির সময়ও বেড়েছে। আগে যেখানে এই ফ্লাইটটির সময় ছিল ১৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিট, সেখানে এখন সময় ২০ ঘণ্টার বেশি লাগছে। ফলে, খরচও বেড়েছে।
এছাড়া, আঞ্চলিক ফ্লাইটগুলোও সমস্যার মধ্যে পড়েছে। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এর তাশখন্দগামী ফ্লাইটগুলোর সময় বেড়ে গেছে। পূর্বে ২ ঘণ্টা ১৮ মিনিট সময় লাগলেও এখন তা প্রায় ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট হয়ে গেছে, কারণ ফ্লাইটগুলো এখন ইরান ও তুর্কমেনিস্তান ঘুরে যাচ্ছে। ফলে, এসব ফ্লাইটের খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধের পর, ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণেই বিমান পরিবহণ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিমান চলাচলের সময় বৃদ্ধি, অতিরিক্ত জ্বালানির জন্য যাত্রাবিরতি এবং আঞ্চলিক ফ্লাইটের সময় বাড়ানোর ফলে খরচ বেড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি বিমান চলাচলে একটি বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও বাড়তে পারে।
পাকিস্তান ভারতের বিমানগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করার ফলে, বিমান চলাচলে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে, দীর্ঘ দূরত্বের ফ্লাইটগুলোর সময় এবং খরচ বেড়েছে, যা যাত্রীদের জন্য অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি, ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনার ফলস্বরূপ বিমান পরিবহণ খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।