মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুটি শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মেনেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর-এর বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। দুইবার তাকে স্থিতিশীল করা গেলেও, তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফেরানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, এবং অবশেষে ছোট্ট এই প্রাণটি মৃত্যুবরণ করে।
গত ৬ মার্চ, মাগুরার শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। কিন্তু সেখানেই ঘটে ভয়ংকর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা। প্রথমে তাকে গুরুতর অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। ৭ মার্চ রাতে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। অবশেষে, ১৩ মার্চ চিকিৎসকদের চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে, শিশুটি পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।
শিশুটির মৃত্যুতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে। এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী ও সাধারণ জনগণ শিশু নির্যাতন রোধে কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানাচ্ছে। সরকারও দ্রুততম সময়ে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক নৈতিকতার উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের সুরক্ষার জন্য পরিবার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সমাজের সব স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।