জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা মনে করছেন, ২৩ মে বৃহস্পতিবার রাত ছিল জুলাইয়ের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের পর অন্যতম কঠিন রাত। শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ইংরেজি ভাষার পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তাঁর ভাষায়, “গত রাতটা ঘুমহীন কেটেছে। একটি চিন্তা মাথা থেকে সরছিল না।”
তিনি আরও লিখেছেন, “এটা দোষারোপের সময় নয়, বরং আত্মসমালোচনার মুহূর্ত। রাজনৈতিক অঙ্গনের পারস্পরিক অবিশ্বাস আর ক্ষুদ্র স্বার্থের দ্বন্দ্ব পুরো গণতান্ত্রিক উত্তরণকে হুমকির মুখে ফেলছে। একটি জাতি যে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সেই জাতির স্বপ্নকে আমরা স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য ধ্বংস হতে দিতে পারি না।”
ডা. তাসনিম জনগণের প্রতি রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, “এই বিপ্লব জনগণের, এবং সেই জনগণের কাছে আমাদের দায়িত্ব— সংযম, সংলাপ ও ঐক্য বজায় রাখা।”
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমাও বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তার ফেসবুক আইডিতে একটি বক্তব্য প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, “দেশ এখন আর কোনো রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নেই। এই ঐক্য অনেক আগেই, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকেই, ভেঙে পড়েছে।”
তিনি মন্তব্য করেন, “যদিও খোলসটা তখনও ছিল, এখন তো খোলসটাও খুলে পড়ছে। তাই অনেকে অবাক হলেও, এটা অনিবার্য ছিল।”
উমামা জানান, দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে একাধিক গোপন শক্তি সক্রিয় রয়েছে। তার ভাষায়, “জুলাইয়ের সকল লড়াকু গোষ্ঠী এখন ক্ষমতা নিয়ে ব্যস্ত। যেন গোটা দেশটাই একটা রাজনৈতিক খেলার মাঠ হয়ে গেছে।”
উমামা ফাতেমা তার পোস্টে উল্লেখ করেন, “রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি, ধৈর্য এবং পারস্পরিক সম্মতির রাজনীতি ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণের আর কোনো রাস্তা নেই।”
কিন্তু হতাশার সুরে যোগ করেন, “দুঃখজনকভাবে, এখন প্রতিটি শক্তি অন্যদের ‘বেইমান’ মনে করে। বিশ্বাস ও সম্মানবোধ রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ টেনে উমামা বলেন, “এখন এসে ইউনূস স্যারের জন্য হা-হুতাশ করা কিছুটা বেখাপ্পা শোনায়। যখন ঐক্যের দরকার ছিল, তখন বিভাজনের রাজনীতি হয়েছে। আর এখন করুণ রূপে হাহুতাশ—যেটা আসলে হাস্যকর।”