ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কুমিল্লার গোলাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি ১৩ জন নাগরিককে জোরপূর্বক দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। ১০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফেরত আসা ব্যক্তিরা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার তিনটি পরিবারের সদস্য। তাদের মধ্যে রয়েছেন—মো. জাহিদুল ইসলাম (৩৭), স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩৭) ও কন্যা জবা (৯); মাহাবুর রহমান, তার স্ত্রী হালিমা (২৫), মেয়ে মারুফা (৬) ও ছেলে আলিফ; শাহ্জালাল (৩৫), স্ত্রী মাহমুদা (৩০) এবং চার সন্তান—মামুন (১৪), মুনসুর (৮), মোমিনুল (৩) ও শাহনাজ (৬)।
জানা গেছে, এরা একসময় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং পরে গিয়ে হরিয়ানার শনিপথ এলাকায় বসবাস শুরু করেন। কারও বসবাস ছিল ৬ বছর, কারও ১১ কিংবা ১২ বছর।
এক ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, প্রায় ১০ দিন আগে ভারতের সিআরপিএফ সদস্যরা তাদের শনিপথ থেকে গ্রেফতার করে। এরপর চোখ বেঁধে একটি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত বিমানযোগে তাদের আগরতলায় পাঠানো হয় এবং ২২ মে রাত ১২টা ৩০ মিনিটে ২০৮০/১ঝ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার গোলাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয় বিএসএফ।
প্রত্যাবর্তনের সময় ২০৮০ নম্বর সীমান্ত পিলারের ৭০০ গজের মধ্যে বিজিবি সদস্যরা ১৩ জনকেই আটক করে। বিজিবি জানায়, তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, বিএসএফ-ই তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তাদের জাতীয়তা যাচাই ও তথ্য সংগ্রহ চলছে।
কুমিল্লা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ্-জোহরা বলেন, “বিজিবি আমাদের কাছে ওই ১৩ জনকে হস্তান্তর করেছে। আমরা তাদের খাবার, আশ্রয়সহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দিচ্ছি। তাদের কাছ থেকে ঠিকানা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।”