Home আন্তর্জাতিক আমেরিকা ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র খনিজ চুক্তি: রাশিয়ার শান্তি প্রস্তাব

ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র খনিজ চুক্তি: রাশিয়ার শান্তি প্রস্তাব

Posted by on in আন্তর্জাতিক 0
1st Image

ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এ খবর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “চুক্তির বিস্তারিত সব কিছুই চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং শিগগিরই চুক্তি সই হওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আলোচনা অত্যন্ত গঠনমূলক হয়েছে এবং আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের নেতারা শিগগিরই এই চুক্তিতে সই করবেন।”

এর আগে, এই মাসের শুরুতে, মার্কিন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে, এখন পরিস্থিতি নতুন দিকে মোড় নিয়েছে, এবং আলোচনা দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

এদিকে, রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, “মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তি চায়।” এটি ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে, কারণ রাশিয়া শান্তির জন্য সাময়িক বিরতির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চাচ্ছে।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ইউরোপের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন, এবং অনেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। এই সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনকে আরও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, “ইউক্রেনে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সরবরাহ আরও দ্রুত করতে হবে। এই যুদ্ধ ইউরোপের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট।”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সম্মেলনে বলেন, “এই যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে সব কার্ড নেই।” এটি একটি পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি, কারণ এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “এ যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে সব কার্ড রয়েছে।”

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্মেলনে বলেন, “পুতিন আমাদের শান্তি দেবেন না, কোনো কিছুর বিনিময়ে তা পাওয়া যাবে না। আমাদের শক্তি, প্রজ্ঞা, ঐক্য এবং সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তি অর্জন করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য লক্ষ্য, এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত।”

এই পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরিয়েছে, যেখানে ইউক্রেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একসাথে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক নেতারা ইউক্রেনকে আরও বেশি সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এবং ইউক্রেনের জনগণ তাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া, ইউক্রেনের বর্তমান সংকট আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখছে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অবস্থান এবং সমাধানের পথ খোঁজার উদ্যোগ বাড়ছে। ইউক্রেনের সরকার এবং তার সহযোগী রাষ্ট্রগুলো শান্তির জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, এবং তারা বিশ্বাস করেন যে, একসাথে কাজ করে তারা এই যুদ্ধের সমাধান বের করতে সক্ষম হবে।