Home অর্থনীতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২০.৮৫ বিলিয়ন ডলার দাঁড়ালো

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২০.৮৫ বিলিয়ন ডলার দাঁড়ালো

Posted by on in অর্থনীতি 0
1st Image

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রধানত প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশের মোট রিজার্ভ ২০.৮৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৮৫ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এ সংখ্যা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং দেশের অর্থনৈতিক দৃঢ়তার প্রতি একটি শক্তিশালী সংকেত হিসেবে গণ্য হচ্ছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত মোট গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬১১ কোটি ডলার, আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসারে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৫ কোটি ডলার। এর মানে হল, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বিরাট পরিমাণে বৃদ্ধি হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যত উন্নতির জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

এদিকে, চলতি ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্সে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা গেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম ২২ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৯৩ কোটি ডলার বা ১.৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারি মাসেও রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর আগের জানুয়ারি মাসে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২১৯ কোটি ডলার বা ২.১৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।

এটি শুধু ফেব্রুয়ারির পারফরম্যান্স নয়, বরং গত আগস্ট থেকে টানা ছয় মাস ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক। এই ধারাবাহিকতা দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও সরকারি প্রোগ্রামের অর্থায়নেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে পরিচিত। এই আয় দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে, দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন, তা পূরণে রেমিট্যান্সের ভূমিকা অপরিসীম। এতে যেমন দেশের আর্থিক খাতে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হচ্ছে, তেমনি আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানও শক্তিশালী হচ্ছে।

এছাড়া, রেমিট্যান্সের বৃদ্ধির ফলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের দেশে পরিবারের সদস্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াচ্ছে। এই প্রক্রিয়া দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা তৈরি করছে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। 

এক কথায়, রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে এবং দেশের জন্য নতুন উন্নয়নমূলক সুযোগ সৃষ্টি হবে।